এক অন্য মাত্রার কালী পূজো বাগদায়
পিঃ টিঃ রিপোর্টার তারক বিশ্বাস : কোলা, কালীপুজা মানে আলো আর আতস বাজির রসনায় ঝলসে ওঠা ঝিক-ঝাক প্যান্ডেলে কত-না রূপে বিরাজমান কালী প্রতিমা। আর তাই দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়। বাগদা ব্লকের বিভিন্ন ক্লাবের বিগ বাজেটের প্যান্ডেল আর প্রতিমার হার্ড কমপিটিশনে হেলঞ্চা ও বাগদাকে মানুষ বলে কালী তীর্থ। থিমের প্যান্ডেল আর বিভিন্ন রূপেরর কালী প্রতিমা দর্শকদের আকর্ষন করে বার বার। কিন্তু তার মাঝেও দু’একটা পূজোর কথা না বললে আমার মনে হয় অপুর্ণ থেকে যায় সবটা বলা। আলোর ঝলকানী আর জৌলুসে মোড়া প্যান্ডেলে কিছু মানুষের কষ্ট আর চোখের জল মেখে থাকলেও এখনো এমনো কিছু পূজো হয় সেখানে থাকে না কোন লাইট, প্যান্ডেলের বাহার।
তবুও প্রকৃত ভক্তদের অভাব হয়না কখনো। দীপাবলির মহা লগ্নে বাগদার চেঙা চাঁদপুর শ্রীরামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সেবাশ্রমে ভক্তি সহকারে পূজো হল ঘটে-পটে। প্রসাদের আধিক্য না থাকলেও ভক্তির যে ঘাটতি ছিল না তা স্ব-চক্ষে না দেখলে অনুভব করা কঠিন। ভক্তি মাখা অমৃত সম প্রসাদের যে কি গুন, তা যারা আন্তরিক ভাবে গ্রহনের সুযোগ পেয়েছে সে ভক্তই জানে। অপর পূজোটি হয় উত্তর চব্বিশ পারগনার বাগদা কোলা গ্রামের শ্মশানে।
৭০ বছর আগে দেবি বাড়ই, ভক্ত বিশ্বাস, শরৎ বিশ্বাস, অন্নদা মজুমদারের মত কতিপয় ধর্মপ্রান ব্যাক্তি কালী মায়ের সাধকরাই ছিল এই পূজোর প্রতিষ্ঠাতা। তার পর থেকে আর কখনো থেমে থাকিনি এই শ্মশানের কালীপুজো। শ্মশানে মৃতদেহ পোড়ানো হয়, তাই এখনো সন্ধ্যার পরে মানুষ এই শ্মশানে যেতে ভয় পায়। কিন্তু মনস্কামনা পূরন আর দুরারোগ্য রোগ-ব্যধি থেকে মুক্তি পাবার আশায় এখনো মানুষ সময়ে অসময়ে ছুঁটে যায় এই শ্মশানে। আগে মাটির দেয়ালের ঘরে কালীপুজো হতো এখন সেখানে অনেক বড়ো মন্দির নির্মান করেছে মায়ের ভক্তরা। সময়ের প্রয়োজনে শ্মশানটির রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে ক্ষিতীশ, সুভাষ, সনজিৎ , মুনে, রোহিত, কুমুদরের মত মানুষরা। এরাই গ্রামবাসীর সহযোগীতায় এ যাবৎ পুজোর খরচ চালিয়ে আসছে। পুজোর কয়দিন এখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয় এবং গ্রামের লোকেরাই এখানে খাওয়া-দাওয়ার বন্দোবস্ত করেন। আশপাশের গ্রামের মানুষ সহ দুর-দূরান্ত থেকেও অনেক মানুষ এখানে মাকে দেখতে আসেন শ্মশান কালী আর শ্যামা মায়ের মহা-প্রসাদ প্রাপ্তির আশায়।