না জানিয়ে শৌচালয়ের কুয়ো বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে থানার দারস্থ আশ্রমের মহারাজ
পারফেক্ট টাইম নিউজ পোর্টাল রিপোর্টার ওমর ফারুককের সাথে ক্যামেরায় ইয়াদ আলী মন্ডল : বাগদা, পাশাপাশি দুটি জমির সীমানা নির্ধারণ কে কেন্দ্র করে বাগদার চাঁদপুর শ্রীরামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সেবাশ্রমের মহারাজ ও চেঙ্গা চাঁদপুরের প্রাক্তন মাস্টারমশাই এর মতোদ্বন্দের বিষয়টি এখন থানায়।
জানা গেছে, একজন রেজিষ্টার্ড সার্ভেয়ারের জরিপের উপর ভিত্তি করে প্রাক্তন শিক্ষক গোবিন্দ বাবু ও তাঁর দুই পুত্র কংক্রিটের পিলার ও তাঁরকাটা দিয়ে সীমানা ঘিরে দেবার সময় সেই নতুন আইলের উপর কিছুদিন আগের নির্মিত শৌচাগারের কুয়োটি মাটি চাপা দিয়ে বন্ধ করে দেন বলে উক্ত আশ্রমের মহারাজা লিখিত অভিযোগ করেন বাগদা থানায়। অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, তাঁকে আগে ভাগে না জানিয়েই তাৎক্ষনিক ভাবে শৌচালয়ের কুয়ো বন্ধ করে দেওয়াতে তাঁর ও আশ্রমে বসবাসরত একাধিক আদিবাসী গরীব ছাত্রের শৌচকর্ম করা মারাত্মক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
খবর পেয়ে পারফেক্ট টাইম নিউজ পোর্টালের পক্ষ থেকে ঘটনাটি সরেজমিন তদন্ত করা কালীন সময়ে উক্ত আশ্রমের মহারাজ স্বামী লোকেশানন্দজী বলেন, ম্যাপে বিতর্কিত জমির আইলটি সোজা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তাঁরকাটার বেড়া দেবার সময় তা কিছুটা বাঁকাও করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রাক্তন শিক্ষক গোবিন্দ বিশ্বাস ও তাঁর পুত্র নির্মলেন্দু বিশ্বাস বলেন, ইতিপূর্বে উক্ত মহারাজের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন তারা, স্প্রিড পোষ্টে দেওয়া চিঠিও তিনি গ্রহন করেননি।
আর তাঁরকাটার বেডা দেওয়ার ব্যাপারে নির্মলেন্দু বাবু বলেন, একজন রেজিষ্টার্ড সার্ভেয়ারের মাপের ভিত্তিতেই এভাবে ঘেরা হয়েছে বরং কয়েক ইঞ্চি ছেড়েই ঘেরা হয়েছে। নির্মলেন্দু বাবু আরও উল্লেখ করেন, শৌচালয়ের কুয়োটি যেখানে করা হয়েছে জরিপে দেখা গেছে সেই জায়গাটাও নাকি আশ্রমের নয়। এব্যপারেও দেখা গেলো ‘নানা মনির নানা মত’। গ্রামবাসীদের কেউ পক্ষে আবার কেউবা বিপক্ষে কথা বলছেন।
এব্যপারে আশ্রমের মহারাজ তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “আমি সন্যাসী এই সম্পত্তি আমার পৈত্রিক নয় এটা আশ্রমের, দানে পাওয়া সম্পত্তি, এখানে বেশ কিছু আদিবাসী গরীব ছেলের ফ্রি থাকা খাওয়া ও পড়ালেখার ব্যাবস্থা করা হয়। এদের বেশ কয়েকজন গবীব আদিবাসী ছেলে গ্র্যাজুয়েশনও কম্পিলিট করেছে। তাছাড়া এখান থেকে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অসংখ্য গরীব মানুষের নানা ধরনের সাহায্য সহযোগিতাও করা হয়।
আশ্রমের কোন মাঠান জমি নেই, তাই ভিক্ষার মাধ্যমেই এসকল সমাজ কল্যাণ মূলক কাজ করে থাকেন চাঁদপুর শ্রীরামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সেবাশ্রম। আমফান ঝড়ে আশ্রম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সে সব ঠিকঠাক না করে ভিক্ষা করে সংগৃহীত টাকা, চাল, ডাল ক্ষতিগ্রস্ত গরীব মানুষের কল্যাণে বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে গোবিন্দ বাবু ও তাঁর পুত্র বলেন, উক্ত মহারাজ তথা আশ্রমকে ইতিপূর্বে তারাও বিভিন্ন প্রকার সহযোগিতা করেছেন। আর বর্তমানে তারা যেটা করেছেন সেটাও আইনসম্মত বলেই তাদের অভিমত।
বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য দু’পক্ষ পৃথক পৃথক ভাবে বেলুড় মঠের মহারাজ কেও লিখিত ভাবে জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে চেঙ্গা চাঁদপুর রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সেবাশ্রমের মহারাজ স্বামী লোকেশানন্দজীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি সুষ্ঠ সমাধানের লক্ষ্যে বাগদা থানা তদন্ত শুরু করেছে।