বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো রবীন্দ্র নাট্য সংস্থার ১৬তম জাতীয় নাট্য উৎসব
পারফেক্ট টাইম নিউজ পোর্টাল রিপোর্টার নীরেশ ভৌমিক : চাঁদপাড়া, বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো রবীন্দ্র নাট্য সংস্থার ১৬তম জাতীয় নাট্য উৎসব। গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি উৎসবের উদ্বোধন করেন আসামের ‘অভিনব থিয়েটারের পরিচালক’ দয়ালকৃষ্ণ নাথ, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গোবরডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ অসীম পাল, সংস্কার ভারতী দক্ষিণ বঙ্গের সাংগঠনিক সম্পাদক’ উদয় কুমার দাস, গোবরডাঙ্গা পৌরসভার কমিশনার বাসন্তী ভৌমিক সহ বিশিষ্ট গুণীজনেরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই উত্তরীয়, ব্যাচ ও স্মরাক দিয়ে অতিথিদের সম্মানিত করা হয়। উদ্বোধক দায়ালকৃষ্ণ বাবু বলেন “রবীন্দ্র নাট্য সংস্থা দীর্ঘ ২৭বছর নাট্য আন্দোলনের সাথে যুক্ত যা একটা দৃষ্টান্ত, এদের ১৬ তম জাতীয় নাট্য উৎসব, সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। অফিসার ইনচার্জ অসীম বাবু রবীন্দ্র নাট্য সংস্থার পাশে থাকার আশ্বাস দেন। উপস্থিত সকলেই রবীন্দ্র নাট্য সংস্থার ভুয়সী প্রশংসা করেন।
উৎসবের প্রথম দিনের প্রথম নাটক রবীন্দ্র নাট্য সংস্থার প্রযোজনা “বলাই” কাহিনী রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর, নাট্যরূপ ড: অপূর্ব দে, নির্দেশনা বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য, বৃক্ষ ছেদন বন্ধ করে, সবুজায়ন করা, এই নাটকের মূল বার্তা, দ্বিতীয় নাটক, অভিনব থিয়েটার আসাম, তাদের “কড়োয়া সচ্” সত্য কথা সঠিক ভাবে বলা যায় না, সত্য কথা সব সময় তেতো এটাই এই নাটকের মূল বিষয়, ১৭ই ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ দ্বিতীয় দিনের প্রথম নাটক হরিপাল অন্য ভুবনের “খোলা জানালা” নির্দেশনা নীলরতন সামন্ত।
দ্বিতীয় নাটক হালিশহর রঙতাল থিয়েটারের মূকাভিনয় প্রযোজনা “গোপাল ভাঁড়”, এদিনের শেষ প্রযোজনা মহিষা দল শিল্পকৃতী প্রযোজনা “সেই স্বপ্নপুর” নাট্যকার সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়, নির্দেশনা সুরজিৎ সিনহা, এই নাটকে ছাত্র জীবনে ছাত্র ছাত্রীদের স্বপ্ন কি ভাবে ভেঙে যায়, সেটাই বলা হয়েছে। তৃতীয় দিন অর্থাৎ ১৮ই ফেব্রুয়ারির প্রথম নাটক চেতলা কৃষ্টি সংসদ তাদের প্রযোজনা “ইচ্ছেমতো”, নাটক ও নির্দেশনা পিনাকী গুহ, এই নাটকের মূল বিষয় ছোটদের অত্যাধিক পড়াশুনার চাপ, শিশুদের শৈশব নষ্ট করছে।
এদিনের দ্বিতীয় নাটক পরিবেশিত হয় রবীন্দ্র নাট্য সংস্থার “ভীষ্মের শর শয্যা” রচনা ও নির্দেশনা বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য, জল সংকট ও আগামী দিনে জল সংরক্ষণ এর উপায় এই নাটকের মূল বিষয়। উৎসবের শেষ দিন, ১৯ ফেব্রুয়ারি, বিকেল চারটে ছিল থিয়েটার আড্ডা, বিষয় – “অন্তরঙ্গ নাটক” বক্তব্য রাখেন সুপ্রিয় সমাজদার, সুমিত ব্যানার্জী, আশিস দাস, সুদীপ্ত ভূইঁয়া, সুখেন্দু দাস প্রমুখ ব্যাক্তি বর্গ, এছাড়াও আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন পলাশ মণ্ডল, দীপককুমার দা সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি বর্গ। শেষ দিনের প্রথম নাটক মানিকতলা দলছুট তাদের প্রযোজনা “মরণ কূপ”, একক অভিনয়ে মিঠু দে।
নারী নির্যাতন ও নারী স্বাধীনতা এই নাটকের প্রধান বার্তা হিসেবে উঠে এসেছে। পরবর্তী নাটক “মেজদিদির কেচ্ছা” নির্দেশনা সুদীপ্ত ভূঁইয়া, উৎসবের সর্বশেষ নাটক রবীন্দ্র নাট্য সংস্থার কচি কাঁচাদের নাটক “দোয়েল পাখির দেশে” নির্দেশনা স্মৃতি চক্রবর্তী। হিংসার বিরুদ্ধে এই নাটক।
উৎসবে সমস্ত অতিথি অভ্যাগত ও নির্দেশকদের উৎসব স্মারক উপহার দেওয়া হয়, সংস্থার সকল নাট্য কর্মী ও সহযোগী বন্ধুদেরও এই উৎসবের শেষে স্মারক প্রদান করা হয়। এই জাতীয় নাট্য উৎসবকে কেন্দ্র করে মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পরার মতো, উৎসবে ছিল পত্র পত্রিকা স্টল, চায়ের স্টল, আড্ডার জায়গা, সব মিলিয়ে এবারের নাট্য মেলা ছিল জনসমাগম পূর্ণ ও বেশ জম জমাট।