আপোসহীন অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, আপনার এলাকার টাটকা সংবাদ পরিবেশনে সর্বদা দায়বদ্ধ।

অনুষ্ঠানজেলার খবরসর্ম্বধনাসাহিত্য ও সংস্কৃতি।

সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হল ঠাকুরনগরের গুরু নানক নার্সারী স্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব

নীরেশ ভৌমিক : একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে জাতীয় ও শিক্ষালয়ের পতাকা উত্তোলন এবং ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক ও এলাকার শিক্ষানুরাগী মানুষজনের এক বর্ণময় পদযাত্রার মধ্য দিয়ে মহাসমারোহে শুরু হয় ঠাকুরনগরের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুরু নানক নার্সারি এন্ড কেজি স্কুলের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। অপরাহ্ণে ঠাকুরনগর খেলার মাঠের সুসজ্জিত মঞ্চে বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী কৃষ্ণ বণিকের পরিচালনায় বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের মনোজ্ঞ আবাহনী নৃত্যানুষ্ঠানের পর ৫০ টি মঙ্গলদীপ প্রোজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে তিন দিন ব্যাপী আয়োজিত বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন স্বনামধন্য শিশু সাহিত্যিক রতন তনু ঘাটী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন ঠাকুরনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিতেশ বিশ্বাস, ঠাকুরনগর বালিকার প্রধানা শিক্ষিকা মালা মজুমদার সহঃ প্রধান শিক্ষিকা ইতি রায়, স্থানীয় আনন্দ পাড়া নরহরি স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন গায়েন, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অনুপম দে, দীপক মিত্র, প্রাক্তন সৈনিক কালিদাসী বণিক, শিউলি সরকার প্রমূখ।

বিদ্যালয় পরিচালক সমিতির সভাপতি বর্ষীয়ান নারায়ণচন্দ্র সরকার, কার্যকারী সহ-সভাপতি গোবিন্দ দত্ত ও প্রধান শিক্ষিকা তাপসী ভৌমিক ব্যানার্জী উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানান। শিক্ষিকা’গণ সকল বিশিষ্টজনদের পুষ্পস্তবক, উত্তরীয় ও স্মারক উপহারে বরণ করে নেন।

স্বাগত ভাষণে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তাপসী দেবী উপস্থিত সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বিগত শতাব্দীর ষাটের দশকে পাঞ্জাব থেকে আগত শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবী সৈনিক ক্যাপ্টেন ভাগ সিং ও সর্দার অমর সিং তাদের ধর্মগুরু সমাজ সংস্কারক গুরু নানকের নামে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন।

পরবর্তী সময়ে ১৯৭৬ সালে প্রয়াত সমাজসেবি গোবিন্দ দেব ও সুনীল কুমার বিশ্বাসের উদ্যোগে এখানে এই শিক্ষালয়ের পথ চলা শুরু। সেই কিশলয় আজ বিশাল মহিরূহে পরিণত হয়েছে এলাকাবাসীর পৃষ্ঠপোষকতায়। উদ্বোধক স্বনামধন্য সাহিত্যিক শ্রী ঘাটী শহর কলকাতা থেকে অনেক দূরে এই প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা শিশুদের এই বিদ্যালয় এর দীর্ঘ ৫০ বছরে পদার্পণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্মরণীয় দিনে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে স্বরচিত একটি কবিতা পাঠ করে শোনান। রতন তনু বাবু এদিন সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উপলক্ষে বিদ্যালয় প্রকাশিত স্মরণিকা পত্রিকাটিরও আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন।

তিন দিনব্যাপী আয়োজিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের কচি-কাঁচারা সংগীত, আবৃত্তি, নৃত্য, নাটক, নৃত্য-নাট্য, গীতি আলেখ্য, মূকাভিনয় এবং সমবেত সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করে।বিদ্যালয়ের পড়ুয়া’গণ পরিবেশিত নৃত্যনাট্য ‘টুনটুনি ও দুষ্টু বিড়াল’ নাটক ‘পৃথিবীর অসুখ-বিসুখ’, মাইম ‘সত্যবাদী কাঠুরিয়া’।

ছিল বিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের মনের কথা ও মনোজ্ঞ সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তি ও শ্রুতি নাটক। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’গণের গীতি আলেখ্য, শিক্ষিকা মলিনা সাহা ও মুনমুন হালদারের কন্ঠে কবিতা আবৃত্তি এবং শিক্ষিকা’গণ পরিবেশিত শ্রুতি নাটক ‘শেষের রাত্রি’ সমবেত দর্শক ও শ্রোতৃ মন্ডলীর উচ্চসিত প্রশংসা লাভ করে। এছাড়াও ছিল সুভাষ চক্রবর্তীর যাদু প্রদর্শনী ও পরিবেশিত শ্রুতি নাটক। প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবক ও এলাকার শিক্ষাদরদি মানুষজনের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে উৎসব অঙ্গন মুখরিত হয়ে ওঠে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *