কবীরের জীবনী নিয়ে গোবরডাঙ্গা নকসার নতুন নাটক “কবিরা খাড়া বাজার মে”
নীরেশ ভৌমিক : নাটকের শহর গোবরডাঙ্গার অন্যতম নাট্যদল নকসা পরিচালিত গোবরডাঙ্গা সংস্কৃতি কেন্দ্রের বিচিত্রায় গত ১ সেপ্টেম্বর সাড়ম্বরে মঞ্চস্থ হয় নকসার নতুন নাটক ‘কবীরা খাড়া বাজার মে’, নাট্যকার ভীষ্ম সাহানির এই নাটকটিকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন নকসার বিশিষ্ট অভিনেত্রী দীপান্বিতা বণিক দাস ও ভুমিসুতা দাস।
নকসার প্রাণপুরুষ বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব আশিস দাসের নির্দেশনায় প্রায় দু’ঘণ্টার এই নাটকটিতে কবীর এর জীবন, সংগ্রাম, আদর্শ এবং তৎকালীন সময়ের সমাজ, জাত-পাত, ধর্মীয় গোঁড়ামি, অত্যাচার ইত্যাদি বিষয়গুলি সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।
নাটকটির ৪০ টি চরিত্রে ২২ জন অভিনেতা অভিনেত্রীর অনবদ্য অভিনয় নাটকটিকে সমবেত দর্শক সাধারনের মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে।মধ্যযুগের ধর্ম সংস্কারক কবীরের জীবন ও দর্শনকে কেন্দ্র করে নকসা প্রযোজিত নাটকটিতে হিন্দু ও মুসলমান ধর্মের গোঁড়ামি, অন্ধবিশ্বাস, কঠোর নিয়ম, আচার-বিচারে
মানুষের প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত তখন সহজ ভাবে ধর্মের গভীরতত্ত্ব, শাশ্বত তথ্য আপামর মানুষ বিশেষ করে নিম্নবর্গের মানুষের কাছে তুলে ধরেন কবীর। তাঁর কবিতা ও গানের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই তিনি পৌঁছে যান মানুষের হৃদয়ে। দলে দলে মানুষ ভক্ত হয়ে ওঠেন কবীর এর।
উভয় ধর্মের ধর্মগুরু ও রাষ্ট্রশক্তি বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয় নি। এরপর কবীরের উপর বারংবার আঘাত নেমে আসে। তথাপিও কবীর তার আদর্শ ও বিশ্বাসে অটল থাকেন। কবীর এর প্রয়াণের পর তাঁর দর্শন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে তার বিখ্যাত দোহার মধ্য দিয়ে।
মধ্যযুগে ধর্ম সংস্কারক রামানন্দের মাধ্যমে এক গৃহী সাধক তাঁতি কবীর অনায়াসেই পৌঁছে যান আধুনিক বিশ্বের একবিংশ শতাব্দীতে। যেখানে এখনো জাত-পাত ধর্ম-বর্ণ ও হানাহানি বর্তমান। অন্ধকারময় এই আধুনিক সমাজ ও সভ্যতায় তাই কবীর এখনো প্রাসঙ্গিক।
সেই সঙ্গে প্রাসঙ্গিক ভীষ্ম সাহানি রচিত দর্শক প্রশংসিত ‘কবীরা খাড়া বাজার মে’ নাটকটিও। নাট্যনির্দেশক শ্রী দাসের নির্দেশনায় প্রস্তুত নাটকটি উপস্থিত সকল দর্শককে মুগ্ধ করে।