খাঁটুরা চিত্তপট এর বিদ্যালয় ভিত্তিক নাট্য কর্মশালা
নীরেশ ভৌমিক : খাঁটুরা চিত্তপট বিগত এগারো বছর ধরে নিজেদের নাট্য চর্চায় নিয়োজিত রেখেছেন। নতুন নাট্য প্রযোজনার পাশাপাশি প্রত্যেক বছর নাট্য উৎসব, সেমিনার, সর্ব সাধারণের জন্য নাট্য কর্মশালা আয়োজন করে। থিয়েটার ইন এডুকেশন এই লক্ষ্যকে মাথায় রেখে প্রত্যেক বছর বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে তাঁরা নাট্য কর্মশালা করান। এবছরও তার ব্যাতিক্রম হয়নি।
এতদঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্যমন্ডিত গোবরডাঙা খাঁটুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে ১৬ ই অক্টোবর একদিনের একটি নাট্য কর্মশালা করান। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়এবং বিদ্যালয়ের সকল সহ-শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের ঐকান্তিক সহযোগিতায় এই বিদ্যালয় ভিত্তিক নাট্য কর্মশালা সাফল্যর সাথে সম্পন্ন করে চিত্তপট। বিদ্যালয়ের সকল ছাত্রদের এই কর্মশালাকে ঘিরে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত।
খাঁটুরা চিত্তপট এর পক্ষ থেকে এই কর্মশালা পরিচালনা করেন চিত্তপট এর নির্দেশক অভিনেতা শুভাশিস রায়চৌধুরী এবং তাঁকে যোগ্য সংগত করেন চিত্তপট এর অভিনেতা সুরজিৎ হালদার ও শঙ্খদীপ রায়চৌধুরী। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এই কর্মশালার সাফল্য কামনা করেন তাঁর স্বাগত ভাষণে। চিত্তপট এর পক্ষ থেকে শুভাশিস জানান এমন এক ঐতিহ্যমন্ডিত বিদ্যালয় তথা তার নিজের বিদ্যালয়ে নাট্য কর্মশালা করাতে পেরে তাঁরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।
বিদ্যালয়ের ছাত্রদের উৎসাহ দেখে শুভাশিস, সুরজিৎ, শঙ্খদীপরা কথা দেন আগামীতেও তাঁরা এই বিদ্যালয়ে আবারও নাট্য কর্মশালা করাতে আগ্রহী। এই কর্মশালায় শেখানো হয় নাটকের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে। শারীরিক অভিনয়ের সাথে সাথে কন্ঠ অভিনয়েও বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিভাবে আমাদের বিভিন্ন মানসিক অবস্থার সাথে কন্ঠস্বর ও শরীরি ভাষার পরিবর্তন হয়।
নিজেদের চোখ কান খোলা রেখে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের যে ভিন্ন ভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তাকে লক্ষ্য করে মনে রেখে একজন অভিনেতা ঠিক সময় মত সেই স্মৃতিকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে চরিত্র হয়ে উঠতে পারে। আসলে অভিনয় হল একজন অভিনেতার ব্যক্তিত্বের সামগ্রিক বিকাশ। শেখানো হয় কিভাবে একজন অভিনেতা কোনও নাটকের সংলাপের দুটি শব্দের মাঝখানে নাট্য রচয়িতার না লেখা কথাকে বুঝে নিয়ে একটি চরিত্রকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে পারে।
নাটকের প্রধান উপাদান মঞ্চ, আলো, আবহ, মেকআপ কিভাবে একে অপরের হাত ধরে সমগ্র প্রযোজনাকে মানুষের মনকে ছুঁতে পারে। আলোর প্রতিটা রঙের বিভিন্ন মানে থাকে, ঠিক যেমন আবহে সকালের সুরের সাথে সন্ধের সুরের পার্থক্য আছে, আনন্দের সাথে দুঃখের পার্থক্য। সর্বপরি শেখানো হয় নাটকের সমগ্র বিভাগে আবেগ যুক্তির হাত ধরে চলে, কেননা নাটক হল জীবনের সত্যের পুনরাভিনয়।