জেলার খবরবিনোদন

তবে কি বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষা লাভ এবং চারিত্রিক অবনতির জন্য সংস্কৃতি চর্চা দায়ী ?

পারফেক্ট টাইম নিউজ পোর্টাল থেকে নীরেশ ভৌমিকের রিপোর্ট : চাঁদপাড়া, তরুণতুর্কি নাট্যদল গোবরডাঙ্গা আকাঙ্ক্ষা নাট্য সংস্থার আয়োজনে বর্ষব্যাপী জাতীয় রং বাহারি উৎসবের ২৭ তম দিনে ছিল সেমিনার। আকাঙ্ক্ষা সর্বক্ষণ ই নতুন কিছু সৃষ্টির জন্য উদগ্রীব ।আকাঙ্ক্ষার আয়োজনে গত ২৮ শে মে রবিবার তাঁদের নিজস্ব উপাসনা নাট্যগৃহে অনুষ্ঠিত হলো সেমিনার। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন বিশিষ্ট শিক্ষক পবিত্র কুমার মুখোপাধ্যায় মহাশয়।

আলোচ্য বিষয় ছিল বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষালাভ এবং চারিত্রিক অবনতির জন্য আদতেও কি সংস্কৃতি চর্চা দায়ী? গতানুগতিক স্রোতের বাইরে এসে তাদেরই দলের সদ্য উচ্চ মাধ্যমিকের দুই কৃতি ছাত্রী, একজন অভিভাবক এবং একজন শিক্ষক মহাশয় কে নিয়ে এই আলোচনা চক্রের আয়োজন করে তারা। আকাঙ্ক্ষার সদস্যা কেয়া ঘোষ উচ্চমাধ্যমিকে ৪৩২ নাম্বার পেয়ে সফলতার সাথে পাশ করেছে। কেয়া গোবরডাঙ্গার পার্শ্ববর্তী বিষ্ণুপুর ফরিদকাটি এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।

ছোটবেলা থেকে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে বড় হয়ে উঠেছে । তার ছোট বোনকে পড়িয়ে, সংসারের সমস্ত কাজ সেরে, মাঠে বাবা, মা এর সঙ্গে কাজ করতে হয় তাকে। এছাড়া তো ছিল প্রাইভেট টিউশন , নাটকের ক্লাস । কেয়ার বক্তব্যে উঠে আসে, সর্বপ্রথম প্রয়োজন পরিবারের সহযোগিতা, আমার নাট্যদল এর সহযোগিতা এবং সর্বোপরি নিজের অদম্য ইচ্ছা। তিনি এও বলেন আমার পরীক্ষা ঠিক দশ দিন আগেই ছিল আমাদের আকাঙ্ক্ষার আন্তর্জাতিক মেলবন্ধন উৎসব।

সেখানে আমার পড়া সেড়ে তারপর আমি রিহার্সালে গেছি। নাটকের শো করতে গেছি। এর ফলে আমার কোন প্রকারই পড়াশোনায় ক্ষতি হয়নি আর চরিত্রের অবনতি নয় চরিত্র গঠনে থিয়েটার কিংবা সংস্কৃতি চর্চা অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করে। কৃতি ছাত্রী রিমি সমাদ্দার উচ্চ মাধ্যমিকে ৪০৯ নাম্বার পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। রিমি চারঘাট কোটালবের এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি বলেন , পড়াশুনা, নাচের ক্লাস, নাটকের ক্লাস, টিউশন এবং পরিবার সমস্ত কিছুকে সামলে সকলের সহযোগিতায় আজ আমি এই জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছি।

থিয়েটার চর্চা করতে গেলে তাকে অবশ্যই শিক্ষিত নয় উচ্চশিক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন তার জন্য দরকার চরিত্র গঠন এবং শিক্ষা লাভ। অভিভাবক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রঞ্জিত সমাদ্দার , শিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী, শিক্ষক এবং সাংবাদিক মাননীয় পবিত্র কুমার মুখোপাধ্যায় মহাশয়। পবিত্র বাবু বলেন, সংস্কৃতি শিশুদের ধ্বংস করে না শিশুদের চরিত্র গঠন করে। প্রতিটি পরিবার এবং সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলি যদি তাদের বাচ্চাদের সঙ্গে একটু সহযোগিতা করে তবে নিরাশ হওয়ার কিছুই নেই।

আকাঙ্ক্ষার পক্ষ থেকে দুই কৃতির হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়। রিমির নিত্য এবং কেয়ার আবৃত্তি উপস্থিত সমস্ত দর্শককে মনমুগ্ধ করে তোলে। আকাঙ্ক্ষার সম্পাদিকা তনুশ্রী দেবনাথ (দত্ত) জানান, কেয়া তার আর্থিক প্রতিকূলতার জন্য ইচ্ছা থাকলেও গান শিখতে পারেনি । আকাঙ্ক্ষা তারই ইচ্ছাকে বাস্তব রূপ দেওয়ার আশ্বাস দেন। আমাদের বাকি বাচ্চারা তাঁদের দুই দিদি কে দেখে উদ্বুদ্ধ হোক এই আশা করি। আমি আশাবাদী তারা একদিন প্রত্যেকেই তাদের স্বপ্নের শিখর স্পর্শ করবে। আমরা সব সময় সকলের পাশে আছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *