দত্তপুকুর দৃষ্টি নাট্য সংস্থার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল “দত্তপুকুর নাট্যোৎসব ২০২৪”
নীরেশ ভৌমিক : ১৯৯০ সালে নাট্য দল গঠনের পর থেকেই দত্তপুকুর দৃষ্টি তাদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছে। দৃষ্টির সেই সাংস্কৃতি চর্চার আরও এক অন্যতম নিদর্শন হল এবারের এই “নাট্যোৎসব ২০২৪”। গত ২৭ শে ডিসেম্বর শুক্রবার বিকাল ৫ টায় দৃষ্টির নিজস্ব শিল্পচর্চা কেন্দ্র ‘শিল্পশালা’য় শুরু হয় এবারের উৎসব এবং তা চলে পরবর্তী দুই দিন অর্থাৎ ২৯শে ডিসেম্বর, রবিবার পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব মাননীয় শ্রী সুব্রত দত্ত মহাশয় এবং এদিন ‘দৃষ্টি’র পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয় মাননীয় শ্রী ভাস্কর মুখার্জি, শ্রী অদ্রীশ কুমার রায়, শ্রী সুব্রত দত্ত ও শ্রী দীপেন্দু কুমার রায় কে।এবারের নাট্যোৎসবের তিন দিনে মোট আটটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। প্রথম দিনের প্রথম নাটকটি হল- “লঙ্কা দহন পালা”, গল্প- লীলা মজুমদার , নির্দেশনা- ঐশী ভট্টাচার্য্য, মঞ্চ- অদ্রীশ কুমার রায়, প্রযোজনা- দত্তপুকুর দৃষ্টি।
দ্বিতীয় নাটক – “তোমার চোখে “, নির্দেশনা- ঐশী ভট্টাচার্য্য,আলো- ধনপতি মন্ডল, মঞ্চ ভাবনা- বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য, মঞ্চ নির্মান- অদ্রীশ কুমার রায়, কৃতজ্ঞতা – বিনোদ বিহারী মুখোপাধ্যায়, ভাস্কর মুখার্জি ও অর্ঘদীপ দে। সম্প্রতি দত্তপুকুর দৃষ্টি নাট্য সংস্থার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল – “দত্তপুকুর নাট্যোৎসব ২০২৪”। দ্বিতীয় নাটক- ” গন্ধজালে”, নাট্যকার- মনোজ মিত্র, নির্দেশনা- বিকাশ বিশ্বাস, আলো- বিকাশ বিশ্বাস, প্রযোজনা – কথাপ্রসঙ্গ গোবরডাঙা। এদিনের তৃতীয় তথা নাট্য উৎসবের শেষ নাটক – “জুতা আবিষ্কার “,
নাট্যরূপ- বিপ্রতীপ দে, নির্দেশনা ও মঞ্চ – বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য, আবহ- সুমন মিরবহর ও সুমিত মিত্র,পোশাক- গার্গী ভট্টাচার্য্য,আবহ- কৌশিক সজ্জন, পাপেট- সমীর চক্রবর্তী, কৃতজ্ঞতা – নগেন দত্ত, প্রযোজনা- দত্তপুকুর দৃষ্টি। এই নাট্য উৎসবের পূর্বে গত ১৫ই ডিসেম্বর “দৃষ্টি” র শিল্পশালায় অনুষ্ঠিত হয় ‘অধ্যাপিকা জয়িতা গাঙ্গুলী দত্ত’ স্মৃতি অঙ্কন প্রতিযোগিতা যেখানে বিভাগ ক,খ ও গ মিলিয়ে মোট ১২৪ জন শিশু অংশগ্রহণ করে
এবং প্রত্যেকের হাতেই “দৃষ্টি” র পক্ষ থেকে স্মারক,শংসাপত্র ও ফল তুলে দেওয়া হয় এবং শিশু শিল্পীদের আঁকা এই ছবি গুলি নাট্য উৎসবের আঙিনায় প্রর্দশনেরও ব্যাবস্থা করা হয় যা দেখে দর্শকেরাও অভিভূত হন। এছাড়াও এবারের নাট্য উৎসবের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ২৮শে ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১১ টায় ‘অধ্যাপিকা জয়িতা গাঙ্গুলী দত্ত’র স্মৃতির উদ্দেশ্যে ” দৃষ্টি”র পক্ষ থেকে একটি বিদ্যালয় ভিত্তিক নাট্য উৎসবের আয়োজন করা হয়
এবং এই উৎসবে অংশগ্রহণকারী বিদ্যালয় গুলি হল- অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণীভবন, চাঁদপাড়া নিম্নবুনিয়াদি বিদ্যালয়, কালীবালা কন্যা বিদ্যাপীঠ, কল্যাণগড় বিদ্যামন্দির এবং বিভূতিভূষণ প্রাইমারী স্কুল।তিনদিন ব্যাপী চলা এই নাট্যোৎসব কে কেন্দ্র করে দত্তপুকুর ও তার পাশ্ববর্তী এলাকার সকল মানুষ জন যথেষ্ট উৎসাহ প্রদর্শন করেন এবং উপস্থিত সকল অতিথি ও
সাধারণ দর্শকবৃন্দেরা আগামীতেও এই শিল্প তথা নাট্য চর্চার পাশে থাকার শপথ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শেষ লগ্নে দত্তপুকুর দৃষ্টির কর্ণধার মাননীয় শ্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য ঘোষণা করেন যে আগামী বছরে সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী এই ৬ মাস ব্যাপী এই নাট্য উৎসবটিকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার
এক অভিনব উদ্যোগ তাঁদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে যেখানে বিভিন্ন আত্মীয় ও বন্ধু নাট্যদলগুলি দেশ বিদেশের বিখ্যাত নাটক গুলি মঞ্চস্থ করার মাধ্যমে বর্তমান সমাজে সৃজনশীল ও সুস্থ সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে একে অপরের হাত ধরবেন।