বনগাঁয় পরকীয়ার কারনে বধু হত্যা,জেলে অভিযুক্ত ছেলে ও বাবা,আজও পালিয়ে বেড়াচ্ছে মা
পারফেক্ট টাইম ওয়েব ডেস্ক : ও তো নিজেই ছিল রুপে লক্ষ্মী গুনে সরস্বতী। ওর নিজ গুনে দশভূজার মত শ্বশুর, শ্বাশুড়ী, স্বামী সন্তানদের নিয়ে পুরো সংসারটাকে বড্ড আপন ভেবে বুক দিয়ে আগলে রেখেছিল। তাহলে অমন লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে মরবে কেন ? স্বামীর পরকীয়া ও সীমহীন অবহেলা যে এমন লক্ষ্মী প্রতিমার মত মেয়েটার নির্দয় ও নির্মম ভাবে অকাল মৃত্যু ঘটাবে আজও এটা ভাবতে গায়ে কাটা দেয় জনম দুঃখী অভাগিনী মা সুমিত্রা দেবীর।
ক’দিন আগেও যে সংসারটাকে ঘিরে ছিল একরাশ আশা, এত উন্মাদনা, আজ যেন সেখানেই এসেছে ভাঁটার টান। মেয়েটা না ফেরার দেশে পা রাখতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে গোটা সাংসারিক শান্তিও। পরকীয়ার কারনে বধু হত্যার দায়ে জেলে স্থান হয়েছে মিঠু দাস(২৮)এর ঘাতক ও মাতাল স্বামী দীপঙ্কর দাস(৩২) এবং শ্বশুর আনন্দ দাস(৬৫) এর। আর অমানবিক ভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটনার এত দিন পরও পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মামলার অন্যতম আসামী জল্লাদ সম শ্বাশুড়ী আলো দাস(৫৫)।
অপর দিকে মমতাময়ী এক মায়ের কোল পোছা লক্ষ্মী প্রতিমার মত অতি আদরের ছোট মেয়েটার বিয়োগ ব্যাথায় মূষরে পড়া মা টা তাঁর দু’চোখে অশ্রুর বন্যা বইয়ে যেন অ’পলক নয়নে আবছা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কখন পুলিশ তার মেয়ের ঘাতকদের সাথে অন্যতম আসামী শ্বাশুড়ী আলো দাস কে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি বিধানের সুযোগ করে দেবে।
এই অভাগিনী মা-টার বিশ্বাস, দোষীরা শাস্তি পেলে অনন্ত লোকে থাকা তাঁর প্রানপ্রিয় মেয়েটার আত্মাটা হয়তো একটু হলেও শান্তি পাবে। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এই মামলার বাদী অভাগী মা শ্রীমতী সুমিত্রা দাস জানান, বিগত ১১ বছর পুর্বে বনগাঁর চাঁপাবেড়িয়ার ঠাকুর পল্লীর আনন্দ দাস ও আলো দাসের ছেলে দীপঙ্কর দাসের সাথে তার ছোট মেয়ে মিঠু দাস(২৮)এর বিয়ে দিয়েছিলেন । সেখানে তাঁর মেয়ের দুটি কন্যা সন্তানও জন্ম গ্রহন করেছিল। যাদের নাম দিসা দাস(৮) ও দৃষ্টি দাস(৩)।
মাতাল জামাই দীপঙ্কর দাসের পরকীয়ার সাথে সীমাহীন শারিরিক ও মানসিক অত্যাচার সহ্য করেও মুখবুজে সংসার করছিল মিঠু ছোট্ট মেয়ে দুটোর মুখের দিকে চেয়ে। কিন্ত গত ১৩ই আগষ্ট লোকমুখে খবর পেয়ে দ্রুত বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ছুঁটে গিয়ে দেখেন যেয়েটার নিথর দেহটা পড়ে আছে।
হাসপাতালে মেয়েটার মৃতদেহ ফেলে রেখে বাচ্চা দুটোকে নিয়ে আসামী আলো দাস, আনন্দ দাস ও তাদের ছেলে দীপঙ্কর দাস পালিয়ছে। পরে সুমিত্রা দেবীর সাথে অসংখ্য এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বনগাঁ থানার পুলিশ ঘাতক জামাই দীপঙ্কর দাস ও তার বাবা আনন্দ দাসকে গ্রেফতার করলেও মুল আসামী আলো দাস রয়েছে আজও পালাতক।
উক্ত আসামীদের সাথে মামলার অন্যতম আসামী আলো দাস গ্রেফতার হোক, আদালতে তাদের অপরাধের উপযুক্ত সাজা হলে, অনন্ত লোকে থাকা তার প্রানপ্রিয় মেয়ে মিঠুর আত্মাটা একটু হলেও শান্তি পাবে এই কামনায় বুকে পাষান বেঁধে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন বাগদা থানার সাগরপুর গ্রামের এক ভাগ্যহীনা মা।