আপোসহীন অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, আপনার এলাকার টাটকা সংবাদ পরিবেশনে সর্বদা দায়বদ্ধ।

District newsঅবরোধগ্রামের খবররাজ্যশিক্ষা

বাজিতপুর হাইস্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে আপত্তিকর ও অশালীন কাজের অভিযোগ অতঃপর গ্রেফতার

পারফেক্ট টাইম ওয়েব ডেস্ক :- উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার অন্তর্গত মালিপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক সুদীপ্ত মৈত্র, যিনি মাত্র দুই মাস আগে নদিয়ার কল্যাণী থেকে এই স্কুলে যোগদান করেন, তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীকে শারীরিকভাবে অপমানজনক ও আপত্তিকর আচরণের অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের দাবি, অভিযুক্ত শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রীদের প্রতি অশালীন ব্যবহার করে আসছিলেন। যদিও আগেও স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল, তবুও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার ছাত্রছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। অভিযুক্ত শিক্ষককে স্টাফ রুমে আটকে রেখে তাঁরা বনগাঁ-দত্তফুলিয়া রোড অবরোধ করে। তাঁদের সাথে যোগ দেন অভিভাবকগণওোোঐো নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

এক ছাত্রী জানান, “ওই শিক্ষক প্রায়শই আমাদের অশালীনভাবে স্পর্শ করতেন। আমরা বারবার অভিযোগ করেছি কিন্তু কেউ কিছু করেননি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা এই পথে হাঁটলাম। আমরা চাই, উনি কঠোর শাস্তি পান।”

বাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার সরকার জানান, “গতকালই প্রথমবার এই বিষয়ে ছাত্রছাত্রীরা সরাসরি অভিযোগ করেছে। আজ সকালে আবার বিক্ষোভ শুরু হলে আমরা পুলিশকে জানাই এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে।”

স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি কংকন হালদার বলেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে বিশ্বাস করি। শিক্ষক সমাজের কেউ যদি এমন ন্যক্কারজনক কাজ করে, তাহলে তাকে অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। আমরা স্কুলের তরফ থেকেও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।”

মালিপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবব্রত মণ্ডল বলেন, “ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি স্কুলে আসি এবং ছাত্রছাত্রীদের সাথে কথা বলি। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য আমরা কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি।”

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপি নেতা অমিত লাল বিশ্বাসও। তিনি বলেন, “বর্তমানে অনেক অযোগ্য শিক্ষক টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শিক্ষা ও নীতির অভাব প্রবল। এই ঘটনাটি তার জ্বলন্ত প্রমাণ। আমরা এই শিক্ষকের চাকরি থেকে অবিলম্বে বরখাস্তের দাবি জানাই।”

এই ঘটনা ফের একবার শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষকতার নৈতিকতার প্রশ্নকে সামনে এনে দিয়েছে। সমাজের একজন পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় থাকা ব্যক্তির কাছ থেকে এমন আচরণ সমাজে গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। অনেকেরই মত, শুধুমাত্র আইনি ব্যবস্থা নয়, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রুখতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি ও জবাবদিহিতা আরও জোরদার করা জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *