গ্রামের খবর

রাজনীতির গ্যাড়াকলে পিষ্ঠ উপযুক্ত সরকারী সহযোগীতা বঞ্চিত শোলা শিল্প বাঁচতে চাই সনাতন ধর্মীয় ঐতিহ্যকে বুকে ধারন করেই

পারফেক্ট টাইম নিউজ পোর্টাল রিপোর্টার তারক বিশ্বাস, কোলা :  তখন পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়েছে সূর্য্যদেব। মেঘ রংধনুর লুকোচুরি খেলা আকাশে, মানষপটে এই অমোঘ দৃশ্য দেখতে দেখতে হাঁটার পথে পৌঁছে গেলাম বাগদা ব্লকের এক সীমান্ত সংলগ্ন গ্রাম কোলার শোলা শিল্পী বিশ্বনাথ বিশ্বাসের বাড়িতে। সংসারে তাঁর অভাবের স্পষ্ট ছাপ যা বাড়ির কোনায় কোনায় ছড়ানো ছিটানো। তবুও আতিথ্যেয়তা ও আন্তরিকতার যেন কোন কমতি নেই তাঁর। সময়ের বিবর্তনে কালের গর্ভে তলিয়ে যাওয়া শোলা শিল্পকে আকড়ে যেন কালের সাক্ষী হয়েই বেঁচে আছেন তিনি। হ্যাঁ, বহু প্রাচীন একটি শিল্প এই শোলা শিল্প। বিভিন্ন বই পুস্তক ঘেটে যতদূর জানা যায়, এই শিল্প আজকের নয়, আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে জন্ম হয় এই পুরনো শিল্পের, এই শিল্প মূলত হিন্দু ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানকেই কেন্দ্র করে এই শিল্পের সৃষ্টি।

ধুঁকতে ধুঁকতে যা যুগ যুগ ধরে টিকে আছে আজও কালের সাক্ষী হয়ে, যারা শোলার কাজ করে তাদেরকে বলা হয় মালাকার, শত প্রতিকুলতাকে উপেক্ষা করে সোলা শিল্পকে আজও বাঁচিয়ে রেখেছে বিশ্বনাথ বিশ্বাসের মতন আরও অনেকে। আমাদের বাঙ্গালীদের বারো মাসে তেরো পর্বন, শারদ উৎসব, বিজয়ার শুভেচ্ছা ও কোলাকুলি শেষ হতে না হতেই আসে লক্ষ্মীপূজো, তারপর শ্যামা মায়ের আরাধনা, ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত বিশ্বনাথ বাবু সারা বছর এই শোলার কাজটি করেন এ থেকে সামান্য যা কিছু রোজগার হয় তাতেই কোন রকমেচলে তাঁর সংসার। কিন্তু এ বছরে তেমন বর্ষা না হওয়ায় নদী, নালা, খাল, বিলে রয়েছে জলের প্রচন্ড ঘাটতি। সেকারনে তেমনভাবে শোলা গাছ জন্মাতে পারিনি এবার। শোলা শিল্পীদের রুটি-রুজির জন্য এবার একটু সমস্যা আছে বৈকি ! তারপরও রাজনীতির গ্যাড়াকলে পিষ্ঠ হয়ে উপযুক্ত সরকারী সহযোগীতা বঞ্চিত এই শিল্প বাঁচতে চাই সনাতন ধর্মীয় ঐতিহ্যকে বুকে ধারন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *