উৎসবজেলার খবরবিনোদনসর্ম্বধনা

হাবড়ায় সারম্বরে অনুষ্ঠিত হল শ্রুতি কুঞ্জের বার্ষিক সমারোহ উৎসব

পারফেক্ট টাইম ওয়েব ডেস্ক : গত ১০ নভেম্বর মধ্যাহ্নে শিক্ষার্থীদের সমবেত কন্ঠে ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ’ সংগীতের মধ্যে দিয়ে মহাসমারোহে শুরু হয় হাবড়া স্বামীজি পল্লীর সংগীত শিক্ষার প্রতিষ্ঠান শ্রুতিকুঞ্জের বাৎসরিক উৎসব (সমারোহ)।

দেবী সরস্বতীর মূর্তিতে ফুল-মালা অর্পণ ও মঙ্গলদীপ প্রোজ্জ্বলন করেন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার স্বনামধন্য শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গবেষক ডঃ অরিন্দম সেন। শুরুতে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীগণকে উদ্যোক্তারা প্রস্ফুটিত গোলাপ ও স্মারক প্রদানে বরণ করে নেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করে ছোট্ট রাই কমল ঘোষ, সংগীত পরিবেশন করে শিশু শিল্পী উদিতা দাস, আরাধ্যা কুন্ডু, অনুভব মন্ডল, দীপিকা গাজী, বৃষ্টি সরকার, মেঘা নন্দী, উপাসনা শীল প্রমূখ। গিটারে শুভ, মধু, তবলায় সুরজিৎ দাস, মহাদেব শীল, শিশু শিল্পী আদ্রিতা,

আরাধ্যা ও সৃজীতার কণ্ঠের সমবেত সংগীত, শুভম মল্লিক এর কন্ঠে নজরুল গীতি, দ্বীপায়ন সরকারের খেয়াল এবং বিশেষভাবে সক্ষম স্নেহা সরকারের গাওয়া গান উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করে। অপরাহ্নে শ্রুতিকুঞ্জের বার্ষিক অনুষ্ঠানে আসেন প্রধান অতিথি রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ কঙ্কনা মিত্র (রায় চৌধুরী)।

শান্তিকুঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ অরিন্দম বাবুর মাতৃদেবী বাণী সেন অধ্যাপক ডঃ কঙ্কনা মিত্রকে চন্দন ফোঁটা, উত্তরীয় ও পুষ্পস্তবকে বরণ করে নেন। সংগীত প্রশিক্ষক অরিন্দম সেন শ্রীমতি মিত্রের হাতে স্মারক উপহার ও মানপত্র তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী নবম শ্রেণীর ছাত্র সুদীপ সাহা তার নিজের হাতে আঁকা কঙ্কনা দেবীর প্রতিকৃতি হাতে তুলে দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

উদ্যোক্তারা এদিন বিশিষ্ট শিক্ষক ও সাংবাদিক নীরেশ চন্দ্র ভৌমিককেও স্মারক সম্মানে ভূষিত করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও শিক্ষিকা শিউলি হালদার, শিক্ষক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, সমাজকর্মী দাউদ গাজী এবং ওপার বাংলা থেকে আগত বিশিষ্ট কবি বিশ্বজিৎ ঘোষ। উদ্যোক্তারা সকলকে পুষ্পস্তবক ও স্মারক উপহারের বরণ করে নেন।

বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তাদের বক্তব্যে সুস্থ-সংস্কৃতি এবং সংগীতের চর্চা ও প্রসারের স্মৃতিকুঞ্জ তথা সংগীত শিক্ষক অরিন্দম সেন এর উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রধান অতিথি সংগীত বিশারদ কঙ্কনা দেবী বলেন, বাংলা তথা ভারতবর্ষের সাংস্কৃতিকে ধরে রাখতে এবং সংগীতের চর্চা ও প্রসার ঘটাতে ঘরে ঘরে এমন অরিন্দম তৈরি হোক।

এদিন অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিশ্বজিৎ ঘোষ সম্পাদিত ‘কমল রেখা’ গ্রন্থটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়। বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি প্রেমী অমৃত মন্ডল, সংগীত পরিবেশন করেন স্কলার সমীরন বিশ্বাস, সম্রাজ্ঞী ব্যানার্জী ও জাগৃতি মন্ডল সহ অন্যান্য বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পীগণ।

সংস্কৃতিপ্রেমী তৃষা সরকারের সূচারু সঞ্চালনায় শ্রুতিকুঞ্জ আয়োজিত এদিনের বার্ষিক সমারোহ অনুষ্ঠান সার্থক হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানে অনেক রাত অবধি প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকগণ ছাড়াও এলাকার অগণিত সংগীত ও সংস্কৃতি প্রেমী মানুষজনের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ চোখে পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *