আপোসহীন অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, আপনার এলাকার টাটকা সংবাদ পরিবেশনে সর্বদা দায়বদ্ধ।

জেলার খবররাজনৈতিক দলের খবর।

প্রাক্তন এমএলএ তথা বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব দুলাল বরের ডাকে হেলেঞ্চার টালিখোলা মোড় মায়ের ইচ্ছা লজে ‘সিএএ ও নাগরিকত্ব বিষয়ক সচেতনতা শিবিরে’ জনজোয়ার। বিভ্রান্তি নয়, তথ্যই হাতিয়ার — বার্তা বক্তাদের

পারফেক্ট টাইম ওয়েব ডেস্ক :- হেলেঞ্চা, ২১ জুলাই: বর্তমান সময়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে যে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তা দূর করতেই আজ হেলেঞ্চার টালিখোলা মোড় মায়ের ইচ্ছা লজে একটি বিস্তারিত সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়। শিবিরটির আহ্বানে ছিলেন, প্রাক্তন বিধায়ক ও বিজেপি রাজ্য নেতা দুলাল চন্দ্র বর। শিবিরে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় বিশিষ্ট বিজেপি নেতা ও সমাজসেবী সুমিত বিশ্বাস।

বক্তাদের উপস্থিতি ও আলোচনা :-

শিবিরে উপস্থিত ছিলেন, বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রী বিভা মজুমদার, আইনজীবী অ্যাডভোকেট অনির্বাণ হালদার, কেন্দ্র সরকারের প্রথম শ্রেণীর সরকারী কর্মকর্তা তথা নিখিল ভারত বাঙালি সমন্বয় সমিতির জিএস শ্যামল বিশ্বাস, প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব দুলাল চন্দ্র বর এবং হরিণঘাটা থেকে আগত জনপ্রিয় কবিয়াল ও বিধায়ক অসিম সরকার প্রমূখ।

বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা দূর করে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, “সিএএ কোনও নাগরিকের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় না, বরং নির্যাতিত অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভের পথ সুগম করে।

“সিএএ-এর আওতাভুক্ত নাগরিক কারা ?

প্রধান বক্তারা ব্যাখ্যা করেন, সিএএ ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে নির্যাতিত হয়ে ভারতে আগত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান ও পার্সি সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিকত্ব দানের উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছে। তাঁরা জানান, নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে এবং তাঁর পিতা-মাতাকে নির্দিষ্ট সময়সীমা অনুসারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে।

যেসব নথি নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে :-

বক্তারা ১১টি গুরুত্বপূর্ণ নথির তালিকা তুলে ধরেন —১. সরকারি চাকুরিজীবী/পেনশনপ্রাপ্ত ব্যক্তি হলে পরিচয়পত্র বা পেনশন আদেশ। ২. ০১/০৭/১৯৮৭-র পূর্বে জারি করা ব্যাংক, ডাকঘর, এলআইসি অথবা স্থানীয় সরকারের দলিল। ৩. বৈধ জন্ম সনদ। ৪. বৈধ পাসপোর্ট। ৫. শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র (মাধ্যমিক বা তার চেয়ে বেশি)।

৬. রাজ্য সরকারের দেওয়া স্থায়ী বসবাসের প্রমাণপত্র। ৭. বন অধিকার আইন অনুসারে প্রাপ্ত সার্টিফিকেট। ৮. জাতিগত শংসাপত্র (SC/ST/OBC)। ৯. যদি বিদ্যমান থাকে, জাতীয় নাগরিক পঞ্জির নাম। ১০. স্থানীয় প্রশাসনের প্রস্তুত পারিবারিক নিবন্ধন নথি। ১১. সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত জমি বা বাড়ির দানপত্র।

সময়সীমা অনুযায়ী নথিপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশনা :-

বক্তারা তিনটি সময়সীমা অনুযায়ী আলাদা আলাদা নথি গুছিয়ে রাখার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন —২৬/০১/১৯৫০ থেকে ৩০/০৬/১৯৮৭ পর্যন্ত, ০১/০৭/১৯৮৭ থেকে ০২/১২/২০০৪ পর্যন্ত, ০৩/১২/২০০৪ থেকে ০১/০৭/২০২৫ পর্যন্ত। এই সময়সীমা অনুযায়ী নিজস্ব, পিতা এবং মাতার নামে স্ব-প্রত্যয়িত কাগজপত্র সংরক্ষণ করতে হবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ভোটার তালিকায় নাম থাকাটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে, বিশেষ করে বিহার বা পশ্চিমবঙ্গের কিছু ভোটার তালিকা, যেখানে নাগরিকত্বের যোগ্যতার তারিখ উল্লেখ করা থাকে।

সমাপনী বক্তব্য ও বার্তা :–

বর্তমান আইনে উদবাস্তদের প্রয়োজনীয় সচেতনতা ছাড়া নাগরিকত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই আজ থেকেই প্রত্যেককে নিজের ও পরিবারের প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করা দরকার বলে শিবিরের শেষপর্বে বক্তারা জনগণের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট বার্তাটি দেন।

“সচেতনতা ছাড়া অধিকার রক্ষা অসম্ভব। তথ্যই শক্তি, তাই সকল বিভ্রান্তি ঝেড়ে ফেলে সংরক্ষণের কাজ শুরু করতে হবে।”শিবিরে মহকুমার বিভিন্ন এলাকার প্রচুর সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। আগতদের অনেকেই নিজেদের অজানা প্রশ্ন তুলে ধরেন, যার উত্তর দেন আইনজীবী ও বিশিষ্ট নেতারা।

এই শিবির সাধারণ মানুষের মধ্যে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে :–

উল্লেখ্য, সিএএ ও নাগরিকত্ব বিষয়ক সচেতনতা শিবিরটি সঞ্চালনা করেন, বনগাঁর বিজেপি নেতা গোবিন্দ বিশ্বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *