জেলার খবরবিনোদন

গোবরডাঙা রূপান্তরের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের পরিসমাপ্তি

চাদঁপাড়া থেকে নীরেশ ভৌমিকের রিপোর্ট : গোবরডাঙা রূপান্তরের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি হল গত ২৩ শে জুলাই । শিল্পায়ন স্টুডিও থিয়েটারে । ২২ ও ২৩ শে জুলাই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউনিটি মালঞ্চের কর্ণধার দেবাশিস সরকার , উদয় কুমার দাস ( সংস্কার ভারতী , দক্ষিণবঙ্গ) , ইন্দ্রজিৎ আইচ ( সাংবাদিক ) , আশিস চট্টোপাধ্যায় ( পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি সদস্য ) এবং রূপান্তরের সভাপতি শশাঙ্ক শেখর দত্ত ও নাট্যগুরু শ্রী শ্যামল দত্ত মহাশয়।

মাননীয় পৌরপিতা এবং গোবরডাঙা থানার অফিসার ইনচার্জ শ্রী শংকর দত্ত ও অসীম পাল মহাশয় বিশেষ সরকারী কাজের জন্য আসতে না পারায় শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। দীপা ব্রহ্ম মঞ্চে রূপান্তরের ৫০ বছরের কর্ম কান্ডের ইতিহাস তুলে ধরেন মঞ্চে উপস্থিত সকল বক্তাগন । সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন রূপান্তরের বন্ধুদল শিল্পায়নের বিশিষ্ট অভিনেত্রী দীপা ব্রহ্ম, তাঁর কথাও প্রসঙ্গ ক্রমে উঠে আসে বক্তাগনের আলোচনায়।

এই সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের পরেই শুরু হয় রূপান্তরের শিশু কিশোর বিভাগের প্রযোজনা ” সোনালী ভোরের স্বপ্ন ” নাটককার – ড: দীপায়ণ নাথ ও নির্দেশনা – প্রতাপ সেন । ২৫ জন শিশু শিল্পী যে দাপটের সঙ্গে মঞ্চে অভিনয় করেছে বহুদিন আসা করি দর্শকবৃন্দের মনে থাকবে। প্রতাপ সেন একজন সফল পরিচালক আমি বারংবার বলেছি। দ্বিতীয় দর্শনে গোপাল দাসের রচনা ও নির্দেশনায় ” হনুয়া কা বেটা ” , হালিশহর ইউনিটি মালঞ্চের একটা বিখ্যাত পুরানো নাটক যা আজও প্রাসঙ্গিক।

তৃতীয় নাটক সুকান্ত শর্মার রচনা ও নির্দেশনায় গোবরাপুর আরেক থিয়েটারের ” আলো আঁধারে “। দ্বিতীয় দিন ২৩ শে জুলাই ঠিক ৫ টা ৩০ মিনিটে রূপান্তরের নিজস্ব প্রযোজনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর কাব্যনাট্য ” বিসর্জন ” অবলম্বনে ” আত্মাহুতি “। এই নাটকের সামগ্রিক পরিকল্পনা ভাবনা ও নির্দেশনা শ্রী শ্যামল দত্ত। তিনি এই নাটকটির পরিচালনা করে আর একবার প্রমাণ করলেন তিনি কত বড় একজন দক্ষ পরিচালক। ৮৩ বছর বয়সেও তিনি এখনো নবীন পরিচালক।

যার হাত ধরে ১৯৭৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বহু নাটকের জন্ম হয়েছে। আগামীতেও হবে। আমরা অপেক্ষায় থাকলাম।সমস্ত দর্শক শ্রোতা বন্ধুদের মন ভরিয়ে দিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখনও কতখানি প্রাসঙ্গিক তা বুঝতে পারি এই নাটক দেখার পর। প্রত্যেক শিল্পী এবং নেপথ্য কর্মীদের একনিষ্ঠতা প্রমাণ করে কি ভাবে ভালো নাটক পরিবেশন করতে হবে। অসাধারণ প্রযোজনা রূপান্তরের। তারপর দ্বিতীয় নাটক থিয়েটার প্রসেনিয়ামের অম্বর চম্পটীর নির্দেশনায়
” ঘর ছাড়ার ডাক ” ,অজিতেশ বন্দোপাধ্যায়ের ” সওদাগরের নৌকা ” অবলম্বনে নাটক।

আসলে পুরোনো নাটক নতুন আঙ্গিকে মন প্রাণ সব ভড়িয়ে দেয়। পুরোনো স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। উৎসবের শেষ নাটক ” শুখা মাটির শূলিনী ” ছৌ নাচের বর্তমান পরিস্থিতি অনুভব করলাম। সুন্দর উপস্থাপনা হরিপাল নাট্য প্রহরীর , নির্দেশনা পুলক রায়। রূপান্তরের এই উৎসবে উপরি পাওনা নাটকের মাঝখানে বিরতিতে চন্দন দেবনাথ , সুদীপ্তা মুখার্জী , অব্দিক দাস এবং শিল্পী সেন এর সঙ্গীত পরিবেশন। সঙ্গে হলটিকে সুন্দর সুসজ্জিত ভাবে সাজানো যা সত্যিই উৎসবের রূপ নিয়েছিলো।

রূপান্তর ৫০ থেকে আরো অনেক অনেক দূর যাবে তা তাদের কর্মকাণ্ডই প্রমাণ করে। রূপান্তরের বিশিষ্ট অভিনেতা ও শিশু নাটকের পরিচালক প্রতাপ সেন বলেন ৫০ বছরকে স্মরণীয় রাখতে ২০২২ থেকে ২০২৩ এর ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রত্যেক মাসে কোনো না কোনো অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। মূল অনুষ্ঠান আগামী ২২ শে ডিসেম্বর থেকে( পরপর ৪ দিন )২৫ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত গোবরডাঙা পৌর টাউন হলে অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *