শারদ

পারফেক্ট টাইম নিউজ পোর্টালর পূজো পরিক্রমা ২০২১।

গৌরব কর্মকার : বাগদার, মহালয়ার পর থেকেই এক অনাবিল আনন্দ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে প্রবাহিত হতে থাকে। সনাতন ধর্মাবলম্বী তথা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মৎসব এই শারদ উৎসব। এই দিন কটির জন্য পুরো একটি বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকে হিন্দু সম্প্রদায়।

আর এই আনন্দটাকে কোথায়, কিভাবে উপভোগ করছেন সেটা সরাসরি প্রত্যক্ষ করতেই এবারের পূজো পরিক্রমা করতে এবারে আমাদের প্রতিনিধিরা পৌঁছে গেছিলো বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়। বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ঢিল ছোড়া দুরত্বে অবস্থিত বাগদার রনঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের কুলিয়া গ্রাম।

এই গ্রামে বারোয়ারি ও ব্যক্তিগত ৪টা দূর্গাপূজো অনুষ্ঠিত হলেও জানা গেল নাথ বাড়ির পারিবারিক পূজো একটা বিশেষ ঐতিহ্য নিয়ে এবার ৩৫তম বর্ষে পদার্পণ করলো। খবর পেয়ে আমাদের প্রতিনিধি দল মহা-অষ্টমীর দিন নাথ

বাড়ী পৌছে দেখতে পান প্রতিমা বা প্যান্ডেলের জৌলুস না থাকলেও সত্যিই অন্যান্য বারোয়ারি পুজো প্যান্ডেল থেকে এখানেই অঞ্জলি প্রদান ও ভক্তি-মিশ্রিত প্রসাদ গ্রহণের উদ্দেশ্যে ঐতিহ্যবাহী নাথ বাড়ীতে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একত্রিত গ্রামবাসী তথা ভক্তিমতী মা-বোনেদের ভিড়।

গ্রামের অন্যান্য বারোয়ারি পুজো প্যান্ডেল থেকে এখানেই গ্রামবাসীর এত ভিড় করে কেন ? এই প্রশ্নের উত্তরে অন্য ধর্মালম্বী এলাকার অন্যতম তাইকন্ডো প্রশিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ ছোটকাল থেকে এই নাথ বাড়ীতে দূর্গা পূজো হচ্ছে, এই পরিবারের সদস্যদের ভক্তি ও ব্যাবহার মানুষের আকর্ষণ করে তাইতো মনের অজান্তেই ছুটে আসি।

৭\৮ কিলোমিটার দূরের বাসিন্দা এলাকার জনপ্রিয় নাট্য ও চিত্রশিল্পী সমীর সেন বলেন, ৩৫ বৎসর যাবৎ অতি নিখুত, নিষ্ঠা ও ভক্তির সাথে এখানে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

যারা প্রকৃত অর্থে উপবাসী থেকে মায়ের চরনে অঞ্জলি দিতে চান তাদের জন্য নাথ বাড়ীর দুর্গাপুজো মন্ডবই প্রসস্ত। তাই শত ব্যস্ততার মধ্যেও ওনাদের আন্তরিক কতায় সাড়া দিতে সময় করে একটু না এসে পারি না।

 প্রায় ১৫\১৬ দূরের শিক্ষক শিক্ষক মিত্তুন হালদার বলেন, নাথ বাড়ীর পারিবারিক পূজোর প্রশংসা শুনি লোকমুখে, কি আকর্ষণ আছে এই নাথ বাড়ীর দুর্গাপুজোতে এটা দেখতেই এবার এই সীমান্তবর্তী গ্রামের নাথ বাড়িতে আসা।

নাথ পরিবারের অসংখ্য সদস্যদের সঙ্গে গ্রামবাসীদের ‘মিলনমেলা’ অনবদ্য, খুব ভালো লাগলো, প্রশংসা দাবী রাখে নাথ বাড়ীর দুর্গোৎসব।

নাথ পরিবারের সদস্য ডাঃ নাথ বলেন, তার বাবা স্বর্গীয় রাধাকান্ত নাথ ও মা কালীবালা নাথ নিজ বাড়িতেই বাংলা ১৩৯৪ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পূজো মন্ডব তৈরী করে বিগত ৩৪ বৎসর পূর্বে প্রথম এই দূর্গাপূজার শুভ সূচনা করেন, তখন তো আর গ্রামে এত পূজো হতো না।

তারই ধারাবাহিকতায় পূর্বপুরুষদের আশীর্বাদ আর গ্রামবাসীদের ভালবাসায় নাথ বাড়ীর দুর্গাপুজোর এবার ৩৫শে পা। পারিবারিক রীতি মেনেই এখনো কলকাতার সল্টলেক থেকে দু’জন করে ব্রাক্ষ্মন আসেন পূজো ও চণ্ডীপাঠ করতে।

তিনি আরও বলেন, এটা তাদের পরিবারের ৪ ভাই নারয়ন চন্দ্র নাথ, দেবেন্দ্রনাথ নাথ, শৈলেন্দ্র নাথ নাথ, সুপর্ণ নাথ সহ পুত্রগন শান্তনু নাথ, অতনু নাথ, সুমন্ত নাথ, সুকান্ত নাথ, বিশ্বজিৎ নাথ সহ ২৭ জন সদস্যের পারিবারিক পূজো।

কর্মমসত্রে যে যেখানেই থাকুক না কেন পূজোর এই দিন কটাতে সবাই একত্রিত হয় এই জন্মভিটেয়, গ্রামবাসী ও আত্মীয় স্বজনদের উপস্থিতি চাঁদের হাট বসে এই নাথ বাড়ীতে। এটা নাথ পরিবারের কাছে এক পরম প্রাপ্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *