শিব চতুর্দশী উপলক্ষে গাইঘাটার মিশন তপবনে বিশ্ব শান্তি যজ্ঞানুষ্ঠান
নীরেশ ভৌমিক : ত্রিকালদর্শী দেবাদিদেব শঙ্করের করুণা ও আশীষ প্রত্যাশায় বিগত বছরগুলির মতো এবারও গাইঘাটার ডেওপুল মিশন তপবনে পুজো, যজ্ঞ সহ নানা অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
গত ৮ মার্চ সকালে মিশনের ত্রিকালেশ্বর মন্দিরে অঙ্গনে নাম সংকীর্তনের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত ১৯ তম বর্ষের শিব অর্চনা সহ নানা অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। মধ্যাহ্নে বিভিন্ন বয়সের বহু ছাত্র-ছাত্রী আয়োজিত বসে আঁকো প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
অপরাহ্ণে কবি সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কবিগণ স্বরচিত কবিতা পাঠ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতা শুরুতেই মিশনের প্রাণপুরুষ সুভাষ মোহন্ত উপস্থিত সকল কবিগনকে স্বাগত জানান। সদস্যরা সকলকে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বরণ করে নেন।
সেই সঙ্গে বিগত বছরের স্বরচিত কবিতা পাঠ প্রতিযোগিতায় প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী কবিগণকে মিশনের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হয়। সন্ধ্যায় জগন্নাথ ঠাকুর মঠের সন্তু শ্রী ভোলা মহারাজ কর্তৃক শ্রীমদ ভাগবত গীতা পাঠের অনুষ্ঠানে বহু ধর্মপ্রাণ মানুষজনের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
৯ মাস সকালে অনুষ্ঠিত যোগাসন প্রতিযোগিতায় বহু যোগ প্রশিক্ষনার্থী শিশু ও কিশোর কিশোরী’গণ অংশ নেয়। মধ্যাহ্নে গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মিশনের পক্ষ থেকে প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও গবেষক সাগর চট্টোপাধ্যায়কে বিশেষ সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়।
এছাড়া এদিন জাতীয় শিক্ষক ডঃ নিরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, সমাজকর্মী মিহির দে প্রমূখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সম্বর্ধনা জানানো হয়। সন্ধ্যায় ছিল বাউল সংগীত ও শিবকেন্দ্রিক নৃত্যানুষ্ঠান। ১০ মার্চ উৎসবের শেষ দিন সকাল থেকে মিশনের ত্রিকালেশ্বর মন্দির অঙ্গনে বিশ্ব কল্যাণ এর উদ্দেশ্যে শুরু হয় বিশ্বশান্তি যজ্ঞ।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত সাধু সন্ন্যাসী ও মহারাজ’গনের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত মহা-যজ্ঞের অনুষ্ঠানে ধর্মপ্রাণ মানুষজনের ব্যাপক উপস্থিতি চোখে পড়ে। সমবেত ভক্তদের অনেকেই যজ্ঞে আহুতি প্রদান করেন। যজ্ঞ শেষে সকলেই প্রসাদ গ্রহণ করেন।
সন্ধ্যায় মিশন প্রাঙ্গণের আলোকজ্জ্বল মঞ্চে অনুষ্ঠিত সংগীত ও নৃত্যের অনুষ্ঠানে বহু সংস্কৃতি প্রেমী মানুষজনের উপস্থিতি চোখে পড়ে। নানা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মিশন তপোবন আয়োজিত উনিবিংশতি তম বার্ষিক মহা শিবরাত্রি উৎসব ২০২৪ সার্থকতা লাভ করে।