আপোসহীন অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, আপনার এলাকার টাটকা সংবাদ পরিবেশনে সর্বদা দায়বদ্ধ।

জেলার খবরস্মরনসভা

ঠাকুরনগর প্রতিধ্বনি নাট্য সংস্থার অকাল প্রয়াণ নাট্যকর্মী কার্তিক সেনের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

নীরেশ ভৌমিক : প্রয়াত নাট্য ব্যক্তিত্ব কার্তিক সেন এক বহু স্তরীয় চরিত্র। সম্প্রতি ঠাকুরনগর প্রতিধ্বনি নাট্য সংস্থার বিশিষ্ট আত্মজন ও আরো অনেক কিছু কার্তিক সেন বাংলা থিয়েটার ও সংস্কৃতি জগতে তার সাধ্যাতীত সাহায্য ও সক্রিয়তা রেখে চিরদিনের মত স্বতীর্থদের ছেড়ে বিদায় নিয়েছেন। তার এই অকাল প্রয়াণ মফস্বলের থিয়েটারে এক অপূরণীয় ক্ষতি। শুধু মফস্বল নয়, শহর কলকাতার ও শহরতলীর বহু দলের সফল প্রযোজনার নেপথ্যে থেকে কার্তিক সেনের ভূমিকা সকলেই অকপটে স্বীকার করে। ১৯৬৬ সালের ১লা এপ্রিল জন্মগ্রহণ করা কার্তিকবাবুর পরিবারের সকলেই থাকলেও তার শৈশব কাটে অনাথ আশ্রমে।

সারাটা জীবন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলতে হওয়ায় তিনি নানা রকম কাজে নিজেকে দক্ষ করে তোলেন। কাজ তাকে ভয় পেলেও তিনি কাজকে ভয় পেতেন না। জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ বলতে যা বোঝায় কার্তিক সেন এক কথায় তেমনটাই। ঠাকুরনগরের বুকে শিক্ষার প্রসারে মাদার মেরির নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানোর মূল কারিগর ছিলেন কার্তিক বাবু। তার যোগ্য সহধর্মিনী রমা সেনকে নিয়ে তার পথ চলার পথে ছিল বিরাট রকমের অনিশ্চয়তা।

তথাপি এর মধ্যে দিয়েই তার দুই ছেলেমেয়ে রিমিল এবং অর্ক কে তথাকথিত ইদুর দৌড়ে না দৌড় করিয়ে প্রকৃত অর্থেই জয়ফুল লার্নিং এর ব্যবস্থা রেখেছিলেন বাড়িতে। তাই শৈশব থেকেই নাচ গান থিয়েটার চর্চায় দক্ষ করে তোলার তাগিদে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে শহর কলকাতার বুকে খ্যাতিমান বিদগ্ধ জনেদের কাছে তালিম নেওয়ার জন্য তিনি শীত গ্রীষ্ম বর্ষা উপেক্ষা করে নিয়ে যেতেন নিয়ে আসতেন। কোন কাজে না বলা তার স্বভাববিরুদ্ধ ছিল।

থিয়েটারের কাজ, সে তার নিজের দলের হোক বা অন্য কোন দলের হোক। তার হাত ছিল সর্বদা প্রসারিত। একজন মানুষ কে শ্রদ্ধা জানাতে গত ১২ই জুলাই ঠাকুরনগরে বিনয় মজুমদারের বাসভবনে ঠাকুরনগর প্রতিধ্বনি সংস্কৃতি সংস্থা আয়োজন করেছিল এক স্মরণ সন্ধ্যা। কার্তিক সেনের স্ত্রী রমা সেনের মাল্যদানের মধ্য দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পালা শুরু হয়। একে একে উপস্থিত সকলেই মালা বা পুষ্পার্ঘ নিবেদন করে কার্তিক বাবুকে শ্রদ্ধা জানান।

যে সন্ধ্যায় স্থানীয় ও বহিরাগত বেশ কিছু নাট্যদল ও প্রতিষ্ঠানের বিশিষ্ট জনেরা ও দলের সমস্ত বিভাগের সদস্যদের উপস্থিতিতে এই স্মরণ সন্ধ্যায় প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ স্মৃতিচারণ এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ করে দেন যে সত্যিই কার্তিক একজন ছোট্ট মানুষ কিন্তু বহুস্তরীয়। ব্যক্তিগত ভাবে অনেকের মতোই ঠাকুরনগর প্রতিধ্বনি সাংস্কৃতিক সংস্থাও নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখে কার্তিক সেনের পরিবারের পাশে দাঁড়াবার প্রতিশ্রুতি রাখে। এই সন্ধ্যায় উপস্থিত সকলেই রিমিল ও অর্কের আরো সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *